আমরা অনেকেই মনে করি, পর্দা শুধু নারীদের জন্য! কিন্তু ইসলাম কি তাই বলে? পুরুষদের কি কোনো পর্দার বিধান নেই?ইসলামে পর্দা শুধু নারীদের জন্য নয়, বরং পুরুষদের জন্যও আছে।
ইসলামে পুরুষদের পর্দার বিধান রয়েছে, তবে এটি নারীদের পর্দার বিধানের তুলনায় কিছুটা ভিন্ন। কুরআন ও হাদিসে পুরুষদের জন্য পর্দার যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তা মূলত শালীনতা, দৃষ্টিনিয়ন্ত্রণ এবং উত্তম চরিত্র গঠনের উপর ভিত্তি করে।
পুরুষদের পর্দার মূল বিধানসমূহ:
- দৃষ্টিনিয়ন্ত্রণ (নজর সংযম)
কুরআনে আল্লাহ বলেন:
“মুমিন পুরুষদের বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনমিত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। এটাই তাদের জন্য অধিক পবিত্র। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত।”
(সূরা আন-নূর, ২৪:৩০)
→ এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, পুরুষদের জন্য পর্দার প্রথম স্তর হলো দৃষ্টিকে সংযত রাখা। যেন তারা অশ্লীল বা হারাম কিছুতে না তাকায়। - শালীন পোশাক পরিধান
ইসলামে পুরুষদের জন্য এমন পোশাক পরার নির্দেশনা রয়েছে, যা শালীন এবং শরীরের নির্দিষ্ট অংশ ঢেকে রাখে।- নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত আবৃত রাখা বাধ্যতামূলক।
- পুরুষদের এমন পোশাক পরা উচিত, যা খুব টাইট বা স্বচ্ছ না হয়, যাতে তাদের শরীরের আকৃতি স্পষ্টভাবে বোঝা না যায়।
- অহংকারসূচক পোশাক পরতে নিষেধ করা হয়েছে (যেমন, সম্পূর্ণ রেশমি কাপড় পুরুষদের জন্য হারাম, তবে কিছু অংশ রেশম হলে অনুমোদিত)।
- অশ্লীল ও অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকা
ইসলামে শুধু বাহ্যিক পর্দাই নয়, বরং চারিত্রিক শুদ্ধতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
হাদিসে রাসূল (সা.) বলেছেন:
“যে ব্যক্তি আমাকে তার দুই চোয়ালের মধ্যবর্তী (জিহ্বা) ও দুই পায়ের মধ্যবর্তী (লজ্জাস্থান) অঙ্গের হেফাজতের নিশ্চয়তা দেবে, আমি তাকে জান্নাতের নিশ্চয়তা দেব।”
(বুখারি, হাদিস: ৬৪৭৪) - নারীদের সাথে সংযত আচরণ
- বিনা প্রয়োজনে অপ্রয়োজনীয় আলাপচারিতা বা মেলামেশা এড়িয়ে চলা।
- নম্রভাবে কথা বলা ও দৃষ্টিকে সংযত রাখা।
- হারাম সম্পর্ক থেকে বেঁচে থাকা।
- সুগন্ধি ও অলংকার পরিধানের সীমাবদ্ধতা
- পুরুষদের জন্য বেশি সুগন্ধি ব্যবহার ও নারীদের মতো অলংকার পরিধান নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
- রাসূল (সা.) স্বর্ণ ও খাঁটি রেশম পরিধান থেকে পুরুষদের নিষেধ করেছেন।
(তিরমিজি, হাদিস: ১৭২০)