মাদকের সঙ্গে নাম জড়িয়েছে দেশের প্রথম সারির কিছু অভিনেত্রী ও মডেলের। নিয়মিত মাদক কেনার অভিযোগ পাওয়া গেছে দেশের আলোচিত অভিনেত্রী তানজিন তিশা, মুমতাহিনা টয়া, সাফা কবির ও সঙ্গীত শিল্পী সুনিধি নায়েকের নামে। এই চারজনের সঙ্গে মাদক সম্পৃক্ততা ঘিরে বিশেষ অনুসন্ধান চালাচ্ছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (নারকোটিক্স)। ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ে এ বিষয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
এর আগে সংবাদমাধ্যমকে সূত্র জানিয়েছে, মাদকসহ গ্রেফতার হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরে বেরিয়ে আসে সাফা, টয়া, তিশা এবং সুনিধির নাম। রয়েছে তথ্য-প্রমাণাদি। একটি বিশেষ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে তারা নিয়মিত মাদক সংগ্রহ করছিলেন। ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের অ্যাডমিন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী অরিন্দম রায় দীপকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন তানজিন তিশা। দেশের একটি সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান-
‘এসব পুরাই মিথ্যা। তাই বলে যা তা লিখে দিবে! আমি কনফিডেন্ট এগুলো মিথ্যা কথা।’
অন্যদিকে টয়া বলেন,
আমি নিজেই খুব বেশি কিছু জানি না! আর বিচারাধীন কোনো বিষয় নিয়ে আমি কোনো কথা বলতে পারবো না। একটাই অনুরোধ সবার কাছে, আমাকে মিডিয়া ট্রায়ালে দাঁড় করাবেন না প্লিজ! আল্লাহ উত্তম বিচারক, দোয়া করবেন আমার জন্য।
এ প্রসঙ্গে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নারকোটিক্সের সহকারী পরিচালক রাহুল সেন সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন,
দীপকে গ্রেফতারের পর তার কাছ থেকে আমরা কয়েকজন প্রথম সারির অভিনেত্রী ও মডেলের মাদক সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছি। এ বিষয়ে এখনো তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, দীপের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সাফা, টয়া, তিশা এবং সুনিধি নায়েকের নামে সেভ করা কয়েকটি নম্বর থেকে নিয়মিত মাদকের অর্ডার দেয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। পরে নম্বরগুলো যাচাইয়ের জন্য ফোন নম্বরের রেজিস্ট্রেশন রেকর্ড সংগ্রহ করা হয়। এতে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট নম্বরগুলো সাফা কবির এবং টয়ার নামেই রেজিস্ট্রেশনকৃত। তবে তানজিন তিশার নম্বরটির রেজিস্ট্রেশন রয়েছে তার মা উম্মে সালমার নামে।
উল্লেখ্য, ১৭ অক্টোবর ঢাকা বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার হন দীপ। এ সময় তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ সিসা, এমডিএমএ, এলএসডি ও কুসসহ বেশ কিছু মাদক উদ্ধার করা হয়। পরে নারকোটিক্সের একটি বিশেষায়িত টিম দীপকে ২ দিনের রিমান্ডে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, মাদক ব্যবসার বিষয়ে মৌখিক স্বীকারোক্তির একপর্যায়ে দীপের মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটিং পরীক্ষা করা হয়। গণমাধ্যমের হাতে আসা কয়েকটি চ্যাটিং রেকর্ডে দেখা যায়, ২৩ এপ্রিল সাফা কবির তার মোবাইল নম্বর থেকে ৩টি এমডিএমএ অর্ডার দেন। এজন্য দীপের হোয়াটসঅ্যাপে তিনি সংক্ষেপে লেখেন ‘ই’ দিতে পারবা আমাকে ৩টা।’ পালটা বার্তায় দীপ লেখেন দাঁড়াও বলি। সাফা লেখেন ‘ওকে’।এরপর দীপ লেখেন কিভাবে নিবা? যাওয়ার পথে? সাফা লেখেন ‘আমি চেষ্টা করব।’ এছাড়া ৫ সেপ্টেম্বর আরেক চ্যাটিংয়ে মাদকের অর্ডার দেন অভিনেত্রী টয়া। তিনিও সাংকেতিক ভাষায় লেখেন ‘ই’ লাগবে ৫টা। ফিরতি বার্তায় দীপ লেখেন ‘ফর বাংলা ফ্রুট?’ (সম্প্রতি কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত প্রাইভেট পার্টি)। এরপর টয়া লেখেন ‘ইয়াপ (ইয়েস)।’
ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন এখানে
আরও খবর পড়তে ক্লিক করুন এখানে