স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের মানুষ। কিন্তু এ রাষ্ট্র জনগণের রাষ্ট্র হয়নি। ভাবুন তো, আপনি মোবাইল রিচার্জ করছেন, রেস্তোরাঁয় খেতে গেছেন, বা একটা নতুন পোশাক কিনলেন—হঠাৎ দেখলেন খরচ বেড়ে গেছে ! ২০২৫ সালে প্রণীত নতুন শুল্ক ও ভ্যাট বৃদ্ধি আমাদের সবার জীবনে এক বিরাট পরিবর্তন আনতে চলেছে।
প্রথমেই আসি মোবাইল ফোনের প্রসঙ্গে। জানেন কি, মুঠোফোনের সিম বা রিম কার্ড ব্যবহারের ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০% থেকে ২৩% করা হয়েছে? এর মানে হলো, আপনার ইন্টারনেট প্যাকেজ বা কল রেট—সবকিছুর খরচ বাড়তে চলেছে।মোবাইলে ৩ শতাংশ ভ্যাট যোগ হয়েছে তাতে সবমিলিয়ে ১০০ টাকা রিচার্জে আমাদের থাকবে মাত্র ৪৩ টাকা ৭০ পয়সা। আর ইন্টারনেটের দামে ১০ শতাংশ কর যোগ হয়েছে। আগে কোনও সারচার্জ ছিল না।
এখন থেকে রেস্তোরাঁয় খাবার খেতে গেলে আপনাকে ৫% ভ্যাটের জায়গায় ১৫% ভ্যাট দিতে হবে। এর মানে খাবারের বিল অনেকটাই বাড়বে।৩০০ টাকার একটু বেশি খেলেই ভ্যাট দিতে হবে ৫০ টাকা। ৩৩০ টাকা খেলে বিল আসবে ৩৮০ টাকা। তিনগুণ ভ্যাট বাড়লো।এটা শুধু বিলের ওপর নয়, আপনার বাজেটের ওপরও প্রভাব ফেলবে। রেস্তোরাঁয় খাওয়ার আগে দুবার ভাবতে হতে পারে!
সিগারেটের চারটি স্তরে দাম ও শুল্ক উভয়ই বাড়ানো হয়েছে। নিম্নস্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের দাম ৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০ টাকা করা হয়েছে। এতে প্রযোজ্য সম্পূরক শুল্ক ৬০ শতাংশ থেকে ৬৭ শতাংশ করা হয়েছে।এছাড়া মধ্যমস্তরে ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৬৭ শতাংশ করা হয়েছে।
উচ্চস্তরে ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪০ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬৭ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।আর অতি উচ্চস্তরের সিগারেটের দাম ১৬০ টাকা থেকে ১৮৫ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬৭ শতাংশ করা হয়েছে।
ব্র্যান্ডের তৈরি পোশাক কিনতে গেলে এখন আপনাকে আগের চেয়ে বেশি ভ্যাট দিতে হবে—৭.৫% থেকে এটি এখন ১৫%।অর্থাৎ এই ঈদে ৩ হাজার টাকার একটা পাঞ্জাবি নিলে বিলের উপর ভ্যাট যোগ হয়ে মোট বিল হবে ৩৪৫০ টাকা।
মিষ্টির দোকানের ভ্যাটও সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে মিষ্টির দামও বাড়বে। উৎসবে এক কেজি মিষ্টি কিনতেও মানুষকে ভাবতে হবে।
বিস্কুট, জুস, ড্রিংক, ইলেকট্রোলাইট ড্রিংক, কেক , আচার, সস এসব পণ্যভেদে ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক এবং ১৫ শতাংশ ভ্যাট বসানো হয়েছে।
সব ধরনের টিস্যুর ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। আগে ছিল সাড়ে ৭ শতাংশ। ভ্যাট বেড়ে দ্বিগুণ হওয়ার ফলে টিস্যুর দামও বাড়বে।
মোবাইল, ওষুধ, চশমা, টিস্যু, ফলের মত দরকারি জিনিসে ভ্যাট বাড়ালো। স্বাধীন দেশের নাগরিকদের পকেটে চাপ বাড়ানোর দায় কার?
ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন এখানে
আরও খবর পড়তে ক্লিক করুন এখানে